নাম ড্রীম ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল কে.জি স্কুল। বিদ্যালয়টি ধুনটের সিমান্তবর্তী সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার ভানুডাঙ্গা বাজারে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটি বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার চরখুকশিয়া গ্রামের আব্দুর রউফ নামের একজন পরিচালনা করেন। করোনা কালিন সময়ে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি ভাবে বন্ধের ঘোষনা দেন। এর কিছুদিন পর প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পাঠদানের জন্য অবলম্বন করেন অভিনব কৌশল।
গত ২০ ডিসেম্বর ২০২০ রবিবার সরজমিনে দেখা যায়, ধুনট উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়নের চরখুকশিয়া গ্রামে ডেকোরেটরের কাপড় দিয়ে ছাউনী তৈরী করে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করেছেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আব্দুর রউফ। পরোক্ষ ভাবে দেখার পর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রতিষ্ঠানের পরিচালক কে খবর দেয়া হয়। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন বিয়ের অনুষ্ঠান করার জন্য এ ছাউনী করা হয়েছে। ছাউনী গুলো ক্লাস রুমের মত ভাগ করা কেন? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেন নি তিনি। সামনেই অনেকগুলো সাইকেল চোখে পড়লো। এখানে এত গুলো সাইকেল কেন? এ প্রশ্নেরও কোন উত্তর দেননি পরিচালক আব্দুর রউফ। সন্দেহ হওয়ায় সাকেল গুলোর কাছ এগিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সমাজ উন্নয়ন কর্মসুচীর আওতায় সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগাম নামের একটি টিন সেড কার্যালয় চোখে পড়ে। কার্যালয়ের দরজা দিয়ে একজন শিক্ষার্থীকে প্রবেশ করতে দেখা যায়। তৎক্ষনাত কার্যলয়ের ভিতরে প্রবেশ করার পর অনেক গুলো কে.জি শিক্ষার্থীদের দেখা মেলে। সেখানে বদ্ধ ঘরে অন্ধকারে বাল্ব জ্বালিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছেন এক নারী শিক্ষক। এখানে কোন কে.জি স্কুলের শিক্ষার্থীদের পড়ানো হচ্ছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে নারী শিক্ষক বলেন এটা কোন কে.জি স্কুলের না। এখানে কোচিং করানো হয়। এখন ওদের পরীক্ষা চলছে। বদ্ধ ঘরে ছোট ব্রেঞ্চে চাপাচাপি করে শিক্ষার্থীদের বসিয়েছেন কেন? তিনি এর কোন উত্তর দেননি। এটা যদি কোচিং সেন্টারই হবে তাহলে সামনের প্যানাতে ড্রীম ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল কে.জি স্কুল লেখা কেন? এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি চুপ থাকলেন।
বাহিরে আসার পর প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আব্দুর রউফ সংবাদ কর্মীদের সাথে নিয়ে ভানুডাঙ্গা বাজারে গিয়ে নিজ প্রতিষ্ঠান দেখান। প্রতিষ্ঠানের লাগানো প্যানাতে লেখা নাম আর সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগাম কার্যালয়ের ভিতরে কোচিং এর প্যানাতে লেখা নাম একই কেন? এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কথার মোড় ঘুরিয়ে চলে যান ড্রীম ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল কে.জি স্কুলের পরিচালক আব্দুর রউফ। ২২ ডিসেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার সকালে আবারও ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সেখানে কোন শিক্ষক বা শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি।
গত সোমবার এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্ত জানান, সরকারী বিধি নিষেধ অমান্য করলে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।