খালেদ সিদ্দিকী, নিজস্ব প্রতিবেদক:
বগুড়ার ধুনটের সোনারগাঁ-এ তুচ্ছ ঘটনায় স্বল্প বুদ্ধি প্রতিবন্ধীকে পিটিয়ে দু’হাত ভেঙ্গে পুঙ্গু করে দিলো প্রভাবশালী প্রতিবেশি! একইসাথে তার শিশু প্রতিবন্ধী সন্তানকে মারপিট ও স্ত্রীসহ ৪ জনকে গুরুতর জখম করার অভিযোগও রয়েছে ঐ প্রভাবশালী প্রতিবেশির বিরুদ্ধে।
গত ১২ মে ইফতার মুহুর্তে দিনমজুর স্বল্প বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তার শিশু প্রতিবন্ধী সন্তানসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে যখন ইফতারের আয়োজন করছিলেন। তখন তারই প্রতিবেশি প্রভাবশালীরা সংঘবদ্ধভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
হামলার শিকার বগুড়ার ধুনট উপজেলার চিকাশী ইউনিয়নের সোনারগাঁ গ্রামের মৃত খোদা বক্স আকন্দের পুত্র মোস্তাফিজারসহ তার পরিবার।
পরের দিন মোস্তাফিজারের বড় ভাই জাফর আলী বাদী হয়ে ধুনট থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১২ মে আমার ছোট ভাইয়ের জমিতে শফিকুল ইসলামের ২টি ছাগল ধান খেয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করলে তাকে তা জানালে সে কর্ণপাত না করায় জহুরুল ইসলাম ও হাকিমের কাছে জানালে তারা সকলেই ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায়। আমি প্রতিবাদ না করে বাড়ি চলে আসি। কিন্তু ইফতারের পূর্বে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে একই গ্রামের পড়শী-প্রতিবেশি আফজাল হোসেন আকন্দের পুত্র জহুরুল ইসলাম, জহুরুল ইসলামের পুত্র পর্যায়ক্রমে হাকিম, উকিল, সুলতান, মৃত নুরু ফকিরের পুত্র শফিকুল, শিপন, নুরুল ইসলামের পুত্র মিঠু ও মকুল তার ভাই মোস্তাফিজুর রহমানকে লোহার রডসহ দেশিয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলোপাতাড়ী মারপিট করে ফেলে রেখে যায়। এসময় তারা তার দুহাত ভেঙ্গে নিস্তেজ করে দেন, দুহাত পুঙ্গু করার পর তারা তার কমোরে (মেরুদন্ড) সজোরে আঘাত করে হাড় ভেঙ্গে দেয়। তবে এঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে হযরত আলী মাস্টার ও তার ছেলে শুভর সংশ্লিষ্টতা ব্যাপক বলে দাবি করেছেন বাদী। এমনকি তারা ২ লক্ষ টাকা ট্রাঙ্কের মধ্যে থেকে লুট করে নিয়ে যায় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
জাফর আলী জানান, এসময় মোস্তাফিজারের স্ত্রী মাজেদা খাতুনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে। তাকেও ধুনট সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই সাথে তাদের শিশু প্রতিবন্ধী সন্তানকেও ছাড় না দিয়ে অমানবিক নির্যাতন করার অভিযোগ করেন তিনি। তিনি সাংবাদিকদের জানান, দিনমজুর মোস্তাফিজারকে সামান্য বিষয়ে অন্যায়ভাবে যে নির্যাতন করে পুঙ্গু করা হয়েছে, তার স্ত্রীকে যে নির্যাতন করা হয়েছে এবং তার প্রতিবন্ধী সন্তানকেউ যেমন ছাড় দেয়া হয়নি তেমনি যেন প্রশাসনও উল্লেখিত ৮জনসহ আরো ৮/১০জন যারা এর সাথে জড়িত ছিল তাদেরকেও ছাড় না দিয়ে কঠিন শাস্তি দেয়। একই সাথে আমার ভাইয়ের উপার্জনে ৫জন সদস্যের পেটে অন্ন জোগান যারা বন্ধ করলো যারা সারা জীবন তাকে পুঙ্গু করলো তাদের ক্ষতিপুরণ আদায়সহ কঠিন শাস্তি দাবি করছি।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে তার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা (এস,আই) আতিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সাংবাদিকরা এঘটনার তথ্য সংগ্রহে গেলে (এস,আই) আতিক এবিষয়ে কোন কথা বলতে চাননি। তবে তিনি জানিয়েছেন ঘটনার তদন্ত চলছে অমানবিক এ নির্যাতনের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করা হলে, এবিষয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
এদিকে বাদীর দাবি, স্থানীয় প্রভাবশালীদের দিয়ে এঘটনায় বাড়াবাড়ি না করার হুমকি ধামকি অব্যাহত রেখেছে দায়ীরা। তিনি জানান, প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই।