একে আজাদ:
বুধবার দুপুর আড়াইটা। বগুড়ার শহরতলী বনানী বাস স্ট্যান্ডে একটি আন্তঃজেলা ট্রাক থেমে আছে। ট্রিপল দিয়ে ট্রাকটি মুড়ানো। দেখে মনে হবে মাল বোঝাই করা।
কিন্তু ট্রাকটির পেছনে মানুষের আনাগোনা দেখে আমার কিছুটা সন্দেহ হলো। ট্রাকটির পেছনে গিয়ে দেখা গেল কোন পন্য বোঝাই নয়? মানুষ বোঝাই করছেন ট্রাকটির চালক।

ট্রিপলটা একটু উচু করে দেখলাম, গাদাগাদি করে বসে আছে অন্তত অর্ধশাতাধিক নারী-পুরুষ। আর শরীর থেকে অঝেরো ঘাম ঝড়ছে তাদের।
কোন মানুষ পণ্যের মতো প্যাকেট হয়ে যাত্রা করছেন। দেখে খুব খারাপ লাগলো। একজন যাত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম এভাবে যাওয়া মানে মৃত্যুকে ডেকে আনা, তারপরও কেন আপনারা এভাবে যাচ্ছেন, আর কোথায় যাচ্ছেন? তারপরও করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন করা হয়েছে পুরো বগুড়া জেলাকে।

উত্তরে এক ভাই বললেন, ‘ আমার জিবনই নয়, পুরো পরিবারটা লকডাউন হয়ে গেছে চাকুরিটা ছেড়ে আসায়। বেতন ছাড়াই চলে এসেছি। মাসেরও শেষ। এখানে না খেয়ে থাকার চেয়ে, কষ্ট করে হলেও ঢাকায় যাচ্ছি। তাহলে গার্মেন্সের চাকুরীটা বাচবে, পেটও বাঁচবে। সংসারটাও চলবে। বাবা-মাকেও খরচ দিতে পারবো। ভাই-বোনেরাও লেখা পড়া করতে পারবে’।
এরই মধ্যে আমার ছবি তোলা দেখে চালক দ্রুত ট্রাকটি ছেড়ে দিল। -এটাই জীবন। এটাই বাস্তবাতা।
