আমিন ইসলাম:
বগুড়ার রাস্তার মোড়ে মোড়ে কাটলো পুলিশের ঈদ
করোনা পরিস্হহিতিতে রাস্তার, মোড়ে মোড়ে, মসজিদের গেটেই কাটলো কর্তব্য পালনে বগুড়ার দুই হাজার পুলিশের ঈদের দিনটি।
দেখা গেছে, সকাল থেকে রাস্তার মোড়ে মোড়ে ডিউটিরত পুলিশ। মসজিদের গেটে, টহলে, ট্রাফিক আইল্যান্ডে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এভাবেই ডিউটি করছে।
কেউ প্রথম জামাতে নামাজ পড়েছে, বাকীরা দ্বিতীয় জামাতে। ট্রাফিক আইল্যান্ডে ট্রাফিক যানবাহন নিয়ন্ত্রন করছে। পুলিশের পাশাপাশি, র্যাব, দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীকেও এই ঈদে একই ভাবে ডিউটিতে দেখা গেছে।
বগুড়ার টেম্পল রোডে কথা হলো রাজশাহীর আলমগীর, চাপাইনবাবগঞ্জের সেলিম ও রুবেল নামের পুলিশ সদস্যের সাথে।
তারা জানালেন, করোনার কারনে সকাল ৬ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডিউটি। করোনার কারনে ছুটি বন্ধ। অন্য অফিস গুলোও বন্ধ। কিন্তু তারা ডিউটিতে নেই। আমরা কিন্তু দিনরাত রাস্তায় পড়ে আছি। ঈদের দিনটি কিভাবে কাটলো বুঝতে পারলাম না। সবাই যখন বাসা থেকে ঈদের নামাজে আমরা তখন পথে পথে ডিউটিতে।
স্ত্রী -সন্তান থাকলেও এক সাথে পোলাও নাসতা খাওয়ার ভাগ্য হলো না।
বগুড়া জিলা স্কুলের সামনে কর্তব্য পালনে ছিল পাবনার নাজমুল, সিরাজগঞ্জের রায়হান সহ কয়েকজন। তারা জানালেন, প্রতি ঈদে অর্ধেক ছুটিতে গ্রামের বাড়ীতে যায়। পরে ঈদুল আজহাতে বাকীরা যায়। কিন্তু এবার কেউ যেতে পারিনি। গ্রামের বাড়ী থেকে বাবা-মা,স্ত্রী ফোন দিয়েছিল। তাদের বলেছি ছুটি নেই। কোরবানীততেও কি হয় বলতে পারবো না। প্রচন্ড মনের কষ্টে আছি।
ছেলে-মেয়েকে ছেড়ে একা ঈদে পড়ে থাকার বেদনা কে বুঝবে?
বগুড়ার ধুনট থানার ওসি তদন্ত মিজানুর রহমান জানালেন, কনষ্টেবল থেকে অফিসার সবাই সকাল থেকে মাঠে ডিউটিতে। ধুনট সদর সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মসজিদে ঈদের নামাজ সহ অন্যান্য জায়গায় ডিউটিতে।
জেলা স্পেশাল ব্রাঞ্চ (ডিএসবি)র ইন্সপেক্টর আশিকুর রহমান আশীক জানান, জেলায় ২ হাজারেরও বেশী মসজিদে ঈদের জামাতে পুলিশকে নজরদারী করতে হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, বগুড়া জেলায় দুই হাজার পুলিশ সদস্য করোনার পর থেকেই ডিউটি করছে অবিরাম।
এর মধ্যে ২৫ জন করোনায় আক্রান্ত। অনেক সদস্য হোম কোয়ারেন্টিনে। বাকী মাঠে ডিউটিতে। ঈদ করতে না পারলেও ডিউটিতে অনিহা নেই কারো। সমান্তরাল ভাবে পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে সব অফিসার ঈদের দিনের মাঠে।