সুমন সরদার, নিজস্ব প্রতিবেদক:
গা ঘেমে ভেজাভেজা। ওরা ছোট্ট বাইসাইকেল চালিয়ে এলো। হাত দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে বলল, আঙ্কেল ওই হলুদ গ্যাসওয়ালা বেলুনের দাম কত। খেলনার দোকানী বলল, ৫০ টাকা। কিছু কম নেন ৪০ টাকা দিই। ওদের দরদাম করা দেখে মনে হচ্ছিল ওরা, না জানি কত বড় মানুষ।
ছোট্ট দুই শিশু বেলুন কিনতে নাটাইপাড়া থেকে সাইকেল চালিয়ে সাতমাথায় বসা এক খেলনার দোকানীকে এভাবেই বলছিল। ছোট্ট বেলার দুরন্তপনার কথা মনে পড়ে গেল। কাছে এগিয়ে গিয়ে ওদেরকে বললাম, করানোর মধ্যে বাসা থেকে বের হয়েছো কেন? ওরা বলল আঙ্কেল ঈদের দিন আর আজকে একটু আনন্দ করব, স্কুল বন্ধ তাই সাইকেল চালিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। হাসতে হাসতে বললো, বেলুন উড়িয়ে খেলব আঙ্কেল। ১২ বছরের সানাউল্লাহ সাথে ১০ বছরের সঙ্গী বিশাল কে নিয়ে সকালে বের হয়েছে ওরা। আগে আমরা পার্কে যেতাম পার্ক খোলা নাই। ঘুড়ি, ক্রিকেট, কানামাছি খেলি আমরা হাসতে হাসতে বলল।
বেলুন আর পাখিগাড়ি নিয়ে চলে গেল ওরা।
শহরের মালগ্রাম এলাকার খেলনা ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম জানালেন, প্রায় আড়াই মাস ধরে ব্যবসা বন্ধ আছে। করোনার কারনে কোথাও বসতে পারিনি। আজকেই সাতমথায় দোকান লাগিয়েছি। কাস্টমার কম, ৮/১০টা ব্যালেন্ডার বেলুন বিক্রি করেছি। আর গোটা চারেক প্লাস্টিকের খেলনা বিক্রি করেছি। সংসার তো চলেনা ভাই। মাঝে মধ্যে দিন মজুরী দিয়েছি।
ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। যদিও এই করোনা পরিস্থিতিতে তা, হয়ে ওঠেনি। শিশুদের নিয়ে ঘর হতে বের হননি অনেক মা- বাবা। বগুড়ার শিশু বিনোদনকেন্দ্র প্যালেস মিউজিয়াম, ওয়ান্ডারল্যান্ডসহ বেশ কিছু বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ। শিশু পার্কের দোলনাগুলোতে তালা ঝুলানো।
করোনার কারণে অনেকেই বিনোদনের জন্য বের হননি। ঘড়ে বসেই টিভি, ফেসবুক আর গান শুনে স্বজনের সাথে আড্ডায় মেতে উঠেছিলেন, তবুও অনেক তরুণ যাদের বাইক আছে তাদেরকে, আবার কিছু উঠতি বয়সের তরুন-তরুণীরা রিক্সা/ অটোরিকশায় চড়ে শহরে ঘুড়ে বেড়িয়েছেন।
ঈদের দ্বিতীয় দিনে শহরে তেমন লোকজন সমাগম ঘটেনি। তবে রিক্সাওয়ালা আর কিছু অস্থায়ী ফলমুলের দোকানীদের বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেখা গেছে।